আমার কৃষি
Thursday, November 19, 2015
Wednesday, August 22, 2012
দানাদার ডাঁটা
মৃত্যুঞ্জয় রায়
দানাদার ডাঁটা আমেরিকায় এক হারিয়ে যাওয়া ফসল। প্রায় আট হাজার বছর ধরে এই পৃথিবীর বুকে দানাদার ডাঁটা চাষ হচ্ছে। কয়েক হাজার বছর আগে প্রাচীন অ্যাজটেক সভ্যতায়ও আমেরিকানদের কাছে দানাডাঁটার দানা ছিল প্রধান খাদ্য। ভাতের মতো তারা এর দানা রেঁধে খেত। মেক্সিকোয় পনেরো শতকে স্প্যানিশ বিজয়ের পর আমেরিকানদের খাবার টেবিল থেকে ধীরে ধীরে এই খাবার উঠে যায়। বহুকাল সেভাবেই এ ফসলটি হারানো ছিল। আমেরিকায় ফসল হিসেবে গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে গবেষণার বিষয় হিসেবে আবার সেই হারিয়ে যাওয়া ফসলটি ফিরে আসে। এরপর ধীরে ধীরে দানার জন্য চাষ হতে থাকে আফ্রিকা, ভারত ও নেপালে। গত দুই দশকে চীন, রাশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও পূর্ব ইউরোপে এর চাষ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। গত কয়েক বছরে আমাদের দেশেও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা এ ফসলটি নিয়ে গবেষণা করে এ দেশে চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এক জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধে এই ফসলকে ‘আগামী দিনের ফসল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা গ্রামাঞ্চলে এ ফসল চাষে তেমন কোনো খরচ হয় না, সহজে ফসল সংগ্রহ ও মাড়াই করা যায়, ধানের মতো চাষ করতে বেশি পানি লাগে না, শুষ্ক পরিবেশেও চাষ করা যায়, ধানের চেয়ে এর দানায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি প্রোটিন আছে এবং সহজে রান্না করা যায়।
দানাডাঁটার গাছ দেখতে অনেকটা মোরগজবা ফুলগাছের মতো। সারা বিশ্বে Amaranthus গনের প্রায় ৬০টি প্রজাতি রয়েছে। দানাডাঁটার রয়েছে তিনটি প্রজাতি, যারা কাউনের ছড়ার মতো বড় ছড়া উৎপন্ন করে ও সেসব ছড়ার দানা খাওয়া যায়। এগুলো হলো Amaranthus hypochondriacus, A. cruentus ও A. caudatus প্রথমোক্ত প্রজাতি বেশি চাষ হয় যুক্তরাষ্ট্রে। দানাডাঁটার গাছ প্রায় ০.৫ থেকে ২ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পাতা বড় ও চওড়া, প্রচুর ফুল লম্বা দোলানো ছড়ায় গাদাগাদি করে ফোটে। পুষ্পমঞ্জরি ১০ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। প্রজাতি ও জাতভেদে পুষ্পমঞ্জরির রঙ মেরুন, সবুজ ও হলুদ বা সোনালি হয়ে থাকে। পাতার রঙও কমলা, সবুজ ও লালচে হয়ে থাকে। তবে মেরুন রঙ প্রায় সবগুলো প্রজাতিতেই থাকে। ফুল ফোটা অবস্থায় গাছ দেখতে খুব সুন্দর দেখায়। পুষ্পমঞ্জরি নিচের দিকে ঝুলতে থাকে। কিছু কিছু পুষ্পমঞ্জরি আগা ছাড়া নিচের পত্রকক্ষেও উৎপন্ন হতে দেখা যায়। গাছ খরা সইতে পারে।
ব্যবহার
দানাডাঁটার গাছ ডাঁটাগাছের মতোই দেখতে, তবে এর পাতা বা ডাঁটা খাওয়া হয় না। চিনা বা কাউনের মতো এর বীজ বা দানা রেঁধে খাওয়া যায়। ভাত হিসেবেও খাওয়া যায়। এর বীজ দিয়ে খই ভাজা যায়, ময়দা তৈরি করা যায়। খইয়ের সাথে গুড় মাখিয়ে লাড্ডু ও মোয়া বানানো হয়। ভারতে এই লাড্ডু খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এ জন্য ডাঁটার দানাকে কখনো কখনো pseudocereal নামে অভিহিত করা হয়।
পুষ্টিমূল্য
দানাডাঁটার অন্যতম আকর্ষণ হলো এর বীজ বা দানা, যার রঙ সোনালি ও অত্যন্ত পুষ্টিকর। শিমের বিচি ছাড়া আর কোনো অশিম বীজে দানাডাঁটার বীজের মতো প্রোটিন নেই। এর বীজে প্রোটিনের পরিমাণ ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ। শুধু প্রোটিনই নয়, এর আঁশও বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম রান্না না করা দানায় আছে কার্বোহাইড্রেট ৬৫ গ্রাম, চিনি ১.৭ গ্রাম, আঁশ ৭ গ্রাম, চর্বি ৭ গ্রাম, প্রোটিন ১৪ গ্রাম, পানি ১১ গ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.২ মিলিগ্রাম, নায়াসিন বা ভিটামিন বি৩ ০.৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৬ ০.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৯ ৮২ মাইক্রোগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৫৯ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৬ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২৪৮ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ৩.৪ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৫৫৭ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৫০৮ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক ২.৯ মিলিগ্রাম। ডাঁটাবীজের দানা সম্পূর্ণ গ্লুটেনিন মুক্ত। চালে গ্লুটেনিন আছে। যাদের গ্লুটেনিন অ্যালার্জি আছে তারা নিশ্চিন্তে ডাঁটার দানা দিয়ে ভাত রেঁধে বা এর ময়দা দিয়ে রুটি বানিয়ে খেতে পারেন।
চাষাবাদ
দানাডাঁটার চাষ ডাঁটার মতোই। জমি চাষ দিয়ে সমতল করতে হবে। যেকোনো মাটিতেই এর চাষ করা যায়। তবে যেখানে পানি জমে না ও উর্বর, সেরূপ মাটিতে ভালো হয়। গম কাটার পর সে জমিতে দানা ডাঁটার চাষ করা যায়। যে জমিতে দানাডাঁটার চাষ করা হবে সে জমিতে দুই বছর পর আবার দানাডাঁটার চাষ করা উচিত হবে। এর মধ্যে সেই জমিতে সয়াবিন বা ভুট্টা চাষ করা যেতে পারে।
বীজতলায় বীজ বুনে চারা তৈরি করে তারপর মূল জমিতে সেসব চারা লাগাতে হবে। এর চারা ভুট্টা বা সয়াবিনের চারার মতো শক্ত নয়, বেশ নরম। তাই চারা তোলা ও লাগানোর কাজ খুব সাবধানে করতে হবে। প্রতি একর জমি চাষের জন্য ১ কেজি বীজ লাগবে। বীজ বোনার সময় হলো মার্চ-মে মাস। এর পরে বীজ বুনলে ফলন কমে। সারিতে চারা লাগাতে হবে। সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৭৫ সেন্টিমিটার এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব হবে ৫০-৬০ সেন্টিমিটার। এর জন্য ভুট্টার মতো বেশি পরিমাণে ইউরিয়া সার দেয়ার দরকার নেই। একরে মাত্র ২০ থকে ৪০ কেজি ইউরিয়া সার যথেষ্ট। চারা লাগানোর কয়েক দিন আগেই জমি চাষের সময় এই সার ছিটিয়ে দেয়া যায়।
ফসল কাটা ও সংরক্ষণ
অক্টোবরে ফসল পেকে গেলে ছড়া কেটে সংগ্রহ করতে হবে। উঠানে পলিথিন বিছিয়ে তাতে ছড়াগুলো বিছিয়ে ভালো করে রোদে শুকিয়ে পিটিয়ে বীজ ছাড়াতে হবে। ছেড়ে পরিষ্কার করে দানা আলাদা করে ড্রামে বা পলিথিনের বস্তায় সংরক্ষণ করতে হবে। গুদামে রাখার সময় বীজে বা দানায় ১০-১২ শতাংশের বেশি আর্দ্রতা থাকা উচিত নয়।
দানাডাঁটার গাছ দেখতে অনেকটা মোরগজবা ফুলগাছের মতো। সারা বিশ্বে Amaranthus গনের প্রায় ৬০টি প্রজাতি রয়েছে। দানাডাঁটার রয়েছে তিনটি প্রজাতি, যারা কাউনের ছড়ার মতো বড় ছড়া উৎপন্ন করে ও সেসব ছড়ার দানা খাওয়া যায়। এগুলো হলো Amaranthus hypochondriacus, A. cruentus ও A. caudatus প্রথমোক্ত প্রজাতি বেশি চাষ হয় যুক্তরাষ্ট্রে। দানাডাঁটার গাছ প্রায় ০.৫ থেকে ২ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পাতা বড় ও চওড়া, প্রচুর ফুল লম্বা দোলানো ছড়ায় গাদাগাদি করে ফোটে। পুষ্পমঞ্জরি ১০ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। প্রজাতি ও জাতভেদে পুষ্পমঞ্জরির রঙ মেরুন, সবুজ ও হলুদ বা সোনালি হয়ে থাকে। পাতার রঙও কমলা, সবুজ ও লালচে হয়ে থাকে। তবে মেরুন রঙ প্রায় সবগুলো প্রজাতিতেই থাকে। ফুল ফোটা অবস্থায় গাছ দেখতে খুব সুন্দর দেখায়। পুষ্পমঞ্জরি নিচের দিকে ঝুলতে থাকে। কিছু কিছু পুষ্পমঞ্জরি আগা ছাড়া নিচের পত্রকক্ষেও উৎপন্ন হতে দেখা যায়। গাছ খরা সইতে পারে।
ব্যবহার
দানাডাঁটার গাছ ডাঁটাগাছের মতোই দেখতে, তবে এর পাতা বা ডাঁটা খাওয়া হয় না। চিনা বা কাউনের মতো এর বীজ বা দানা রেঁধে খাওয়া যায়। ভাত হিসেবেও খাওয়া যায়। এর বীজ দিয়ে খই ভাজা যায়, ময়দা তৈরি করা যায়। খইয়ের সাথে গুড় মাখিয়ে লাড্ডু ও মোয়া বানানো হয়। ভারতে এই লাড্ডু খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এ জন্য ডাঁটার দানাকে কখনো কখনো pseudocereal নামে অভিহিত করা হয়।
পুষ্টিমূল্য
দানাডাঁটার অন্যতম আকর্ষণ হলো এর বীজ বা দানা, যার রঙ সোনালি ও অত্যন্ত পুষ্টিকর। শিমের বিচি ছাড়া আর কোনো অশিম বীজে দানাডাঁটার বীজের মতো প্রোটিন নেই। এর বীজে প্রোটিনের পরিমাণ ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ। শুধু প্রোটিনই নয়, এর আঁশও বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম রান্না না করা দানায় আছে কার্বোহাইড্রেট ৬৫ গ্রাম, চিনি ১.৭ গ্রাম, আঁশ ৭ গ্রাম, চর্বি ৭ গ্রাম, প্রোটিন ১৪ গ্রাম, পানি ১১ গ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.২ মিলিগ্রাম, নায়াসিন বা ভিটামিন বি৩ ০.৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৬ ০.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৯ ৮২ মাইক্রোগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৫৯ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৬ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২৪৮ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ৩.৪ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৫৫৭ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৫০৮ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক ২.৯ মিলিগ্রাম। ডাঁটাবীজের দানা সম্পূর্ণ গ্লুটেনিন মুক্ত। চালে গ্লুটেনিন আছে। যাদের গ্লুটেনিন অ্যালার্জি আছে তারা নিশ্চিন্তে ডাঁটার দানা দিয়ে ভাত রেঁধে বা এর ময়দা দিয়ে রুটি বানিয়ে খেতে পারেন।
চাষাবাদ
দানাডাঁটার চাষ ডাঁটার মতোই। জমি চাষ দিয়ে সমতল করতে হবে। যেকোনো মাটিতেই এর চাষ করা যায়। তবে যেখানে পানি জমে না ও উর্বর, সেরূপ মাটিতে ভালো হয়। গম কাটার পর সে জমিতে দানা ডাঁটার চাষ করা যায়। যে জমিতে দানাডাঁটার চাষ করা হবে সে জমিতে দুই বছর পর আবার দানাডাঁটার চাষ করা উচিত হবে। এর মধ্যে সেই জমিতে সয়াবিন বা ভুট্টা চাষ করা যেতে পারে।
বীজতলায় বীজ বুনে চারা তৈরি করে তারপর মূল জমিতে সেসব চারা লাগাতে হবে। এর চারা ভুট্টা বা সয়াবিনের চারার মতো শক্ত নয়, বেশ নরম। তাই চারা তোলা ও লাগানোর কাজ খুব সাবধানে করতে হবে। প্রতি একর জমি চাষের জন্য ১ কেজি বীজ লাগবে। বীজ বোনার সময় হলো মার্চ-মে মাস। এর পরে বীজ বুনলে ফলন কমে। সারিতে চারা লাগাতে হবে। সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৭৫ সেন্টিমিটার এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব হবে ৫০-৬০ সেন্টিমিটার। এর জন্য ভুট্টার মতো বেশি পরিমাণে ইউরিয়া সার দেয়ার দরকার নেই। একরে মাত্র ২০ থকে ৪০ কেজি ইউরিয়া সার যথেষ্ট। চারা লাগানোর কয়েক দিন আগেই জমি চাষের সময় এই সার ছিটিয়ে দেয়া যায়।
ফসল কাটা ও সংরক্ষণ
অক্টোবরে ফসল পেকে গেলে ছড়া কেটে সংগ্রহ করতে হবে। উঠানে পলিথিন বিছিয়ে তাতে ছড়াগুলো বিছিয়ে ভালো করে রোদে শুকিয়ে পিটিয়ে বীজ ছাড়াতে হবে। ছেড়ে পরিষ্কার করে দানা আলাদা করে ড্রামে বা পলিথিনের বস্তায় সংরক্ষণ করতে হবে। গুদামে রাখার সময় বীজে বা দানায় ১০-১২ শতাংশের বেশি আর্দ্রতা থাকা উচিত নয়।
Thursday, August 9, 2012

মসুর ডালের আবাদ কৌশল:
পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা আছে এমন বেলে দোআঁশ এবং এঁটেল মাটি মসুর চাষের জন্য উপযোগী। মাটির অম্লান (পিএইচ) ৬.৫-৭.৫-এর মধ্যে হলে ভালো হয়। মসুর খরা সহিষ্ণু ফসল এবং বৃষ্টিনির্ভর এলাকায় ভালো জন্মে। জলবায়ুগত বিচারে রবি মৌসুম বাংলাদেশে মসুর চাষ করার উপযোগী। মধ্য অক্টোবর থেকেই এর বপন কাজ শুরু হয় এবং মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত বীজ বপন করা যায়। মসুর বীজ যথাসময়ে বপন না করলে ফলন বেশ কমে যায়।
পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা আছে এমন বেলে দোআঁশ এবং এঁটেল মাটি মসুর চাষের জন্য উপযোগী। মাটির অম্লান (পিএইচ) ৬.৫-৭.৫-এর মধ্যে হলে ভালো হয়। মসুর খরা সহিষ্ণু ফসল এবং বৃষ্টিনির্ভর এলাকায় ভালো জন্মে। জলবায়ুগত বিচারে রবি মৌসুম বাংলাদেশে মসুর চাষ করার উপযোগী। মধ্য অক্টোবর থেকেই এর বপন কাজ শুরু হয় এবং মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত বীজ বপন করা যায়। মসুর বীজ যথাসময়ে বপন না করলে ফলন বেশ কমে যায়।
জাত: উৎফলা (এল-৫) একটি অনুমোদিত জাত।
জমি তৈরি:
মসুরের বীজ আকারে ছোট বলে জমি বেশ ঝুরঝুরে এবং নরম করে তৈরি করতে হয়। আগাম জাতের ধান বা পাট কেটে নেয়ার পর জো এলে জমিতে ৩-৪ বার সোজাসুজি ও আড়াআড়িভাবে চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হয়। পলি মাটিতে বর্ষার পানি চলে যাওয়ার পর বিনা সেচেও মসুরের চাষ করা যায়। মসুর গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না বলে জমি তৈরির সময়ই নালা কেটে পানি সেচের ব্যবস্থা রাখতে হয়।
মসুরের বীজ আকারে ছোট বলে জমি বেশ ঝুরঝুরে এবং নরম করে তৈরি করতে হয়। আগাম জাতের ধান বা পাট কেটে নেয়ার পর জো এলে জমিতে ৩-৪ বার সোজাসুজি ও আড়াআড়িভাবে চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হয়। পলি মাটিতে বর্ষার পানি চলে যাওয়ার পর বিনা সেচেও মসুরের চাষ করা যায়। মসুর গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না বলে জমি তৈরির সময়ই নালা কেটে পানি সেচের ব্যবস্থা রাখতে হয়।
সার প্রয়োগ:
নদীর অববাহিকা অঞ্চলের পলি মাটি স্বভাবতই উর্বর বলে এরূপ জমিতে মসুর চাষ করতে জৈব সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। অন্যান্য অঞ্চলের বেলে দোআঁশ বা এঁটেল দোআঁশ মাটিতে জৈব সার প্রয়োগ করে মাটির উর্বরতা বাড়ানো যায়। এ ক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ৫-৭ টন খামারে পচানো সার জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া হেক্টর প্রতি ৬৬-৮৮ কেজি ইউরিয়া সার এবং ১৮৮-২৫০ কেজি সিঙ্গেল সুপার ফসলেট (ঝঝচ) প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। শেষ চাষের সময় এসব সার জমিতে ছিঁটিয়ে প্রয়োগ করতে হয়। মাটিতে সামান্য পরিমাণ কোবাল্ট ও মলিবডেনাম নামক গৌণ খাদ্যোপাদানের উপস্থিতিতে মিথোজীবী, ব্যাকটেরিয়াগুলোর বংশ বৃদ্ধি ঘটে, যার ফলে মাটিতে নাইট্রোজেন বন্ধন বেশি হয়। সুতরাং হালকা মাটিতে ওই সারের সঙ্গে হেক্টর প্রতি ২ কেজি সোডিয়াম মলিবডেট এবং এক কেজি কোবাল্ট নাইট্রেট মিশিয়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
নদীর অববাহিকা অঞ্চলের পলি মাটি স্বভাবতই উর্বর বলে এরূপ জমিতে মসুর চাষ করতে জৈব সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। অন্যান্য অঞ্চলের বেলে দোআঁশ বা এঁটেল দোআঁশ মাটিতে জৈব সার প্রয়োগ করে মাটির উর্বরতা বাড়ানো যায়। এ ক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ৫-৭ টন খামারে পচানো সার জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া হেক্টর প্রতি ৬৬-৮৮ কেজি ইউরিয়া সার এবং ১৮৮-২৫০ কেজি সিঙ্গেল সুপার ফসলেট (ঝঝচ) প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। শেষ চাষের সময় এসব সার জমিতে ছিঁটিয়ে প্রয়োগ করতে হয়। মাটিতে সামান্য পরিমাণ কোবাল্ট ও মলিবডেনাম নামক গৌণ খাদ্যোপাদানের উপস্থিতিতে মিথোজীবী, ব্যাকটেরিয়াগুলোর বংশ বৃদ্ধি ঘটে, যার ফলে মাটিতে নাইট্রোজেন বন্ধন বেশি হয়। সুতরাং হালকা মাটিতে ওই সারের সঙ্গে হেক্টর প্রতি ২ কেজি সোডিয়াম মলিবডেট এবং এক কেজি কোবাল্ট নাইট্রেট মিশিয়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
বীজ বপন:
মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর মসুর বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। ছিঁটিয়ে বা সারিতে উভয় পদ্ধতিতে বীজ বপন করা গেলেও মসুরের ফলনে তেমন কোনো পার্থক্য না থাকায় সাধারণত শেষ চাষের সময় বীজ ছিঁটিয়ে বপন করা হয়। তবে সারিতে বপন করতে চাইলে ৩০ সে. মি. দূরত্বে সারি করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ৩০-৩৫ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। জমিতে নাইট্রোজেন গুঁটি উৎপাদনকারী ব্যাকটেরিয়া কম থাকলে বপনের আগে উপযুক্ত ইনোকুলাম প্রয়োগ করলে ফলন বৃদ্ধি পায়। তবে জমিতে এর আগে মসুর চাষ করা হয়ে থাকলে প্রাথমিক ইউরিয়া এবং জীবাণু সার প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না।
মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর মসুর বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। ছিঁটিয়ে বা সারিতে উভয় পদ্ধতিতে বীজ বপন করা গেলেও মসুরের ফলনে তেমন কোনো পার্থক্য না থাকায় সাধারণত শেষ চাষের সময় বীজ ছিঁটিয়ে বপন করা হয়। তবে সারিতে বপন করতে চাইলে ৩০ সে. মি. দূরত্বে সারি করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ৩০-৩৫ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। জমিতে নাইট্রোজেন গুঁটি উৎপাদনকারী ব্যাকটেরিয়া কম থাকলে বপনের আগে উপযুক্ত ইনোকুলাম প্রয়োগ করলে ফলন বৃদ্ধি পায়। তবে জমিতে এর আগে মসুর চাষ করা হয়ে থাকলে প্রাথমিক ইউরিয়া এবং জীবাণু সার প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না।
আন্তঃপরিচর্যা:
বীজ বোনার ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে নিড়ানি দিয়ে আগাছা দমন করতে হয়। গাছ ঘন থাকলে পাতলা করা যেতে পারে। সাধারণত বাংলাদেশে মসুর ফসলে সেচ প্রয়োগ করা হয় না। তবে মাটিতে রসের অবস্থা বুঝে সেচ দেয়া উত্তম। মরিচা পড়া এবং নেতিয়ে পড়া রোগ দুটি মসুরের বেশ ক্ষতি করে থাকে। ভিটাভ্যাক্স ৪০০ (১:৪০০ হারে) দ্বারা বীজ শোধন করে বপন করে গোড়া পচারোগ দমন করা যায়। দেরি না করে সময় মতো বীজ বপন করলে মরিচা পড়া রোগ দমন করা সম্ভব।
বীজ বোনার ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে নিড়ানি দিয়ে আগাছা দমন করতে হয়। গাছ ঘন থাকলে পাতলা করা যেতে পারে। সাধারণত বাংলাদেশে মসুর ফসলে সেচ প্রয়োগ করা হয় না। তবে মাটিতে রসের অবস্থা বুঝে সেচ দেয়া উত্তম। মরিচা পড়া এবং নেতিয়ে পড়া রোগ দুটি মসুরের বেশ ক্ষতি করে থাকে। ভিটাভ্যাক্স ৪০০ (১:৪০০ হারে) দ্বারা বীজ শোধন করে বপন করে গোড়া পচারোগ দমন করা যায়। দেরি না করে সময় মতো বীজ বপন করলে মরিচা পড়া রোগ দমন করা সম্ভব।
সাথী ফসল:
গম, আখ, ভুট্টা এবং সরিষার সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে মসুরের চাষ করা যায়। এছাড়া এ দেশে সরিষার সঙ্গেও মিশ্র ফসল হিসেবে মসুর চাষের প্রচলন রয়েছে।
গম, আখ, ভুট্টা এবং সরিষার সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে মসুরের চাষ করা যায়। এছাড়া এ দেশে সরিষার সঙ্গেও মিশ্র ফসল হিসেবে মসুর চাষের প্রচলন রয়েছে।
ফসল সংগ্রহ, মাড়াই, ঝাড়াই ও সংরক্ষণ:
সাধারণত বীজ বপনের ৯০-১০০ দিনের মধ্যেই মসুর ডালে পরিপক্বতা আসে এবং মাঠের ৮০ ভাগ ফল পরিপক্বতা লাভ করলে ফসল সংগ্রহ করা যায়। জাত অনুসারে হেক্টর প্রতি ১.৫-২.০ টন দানা পাওয়া যায়। বীজ সংগ্রহ করার পর ভালো করে রৌদ্রে শুকিয়ে মাটির পাত্রে, টিনে, ড্রামে এমনভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যাতে বাতাস বা কীটপতঙ্গ ঢুকতে না পারে। পোকার আক্রমণ হয়েছে কিনা দেখার জন্য বর্ষাকালে মাঝে মাঝে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
সাধারণত বীজ বপনের ৯০-১০০ দিনের মধ্যেই মসুর ডালে পরিপক্বতা আসে এবং মাঠের ৮০ ভাগ ফল পরিপক্বতা লাভ করলে ফসল সংগ্রহ করা যায়। জাত অনুসারে হেক্টর প্রতি ১.৫-২.০ টন দানা পাওয়া যায়। বীজ সংগ্রহ করার পর ভালো করে রৌদ্রে শুকিয়ে মাটির পাত্রে, টিনে, ড্রামে এমনভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যাতে বাতাস বা কীটপতঙ্গ ঢুকতে না পারে। পোকার আক্রমণ হয়েছে কিনা দেখার জন্য বর্ষাকালে মাঝে মাঝে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
Thursday, August 2, 2012
মনিরামপুরে গ্রীষ্মকালীন টমেটো নতুন দুয়ার উন্মোচন করেছে
লেখক: মণিরামপুর বৃহস্পতিবার, ২ অগাষ্টu-এ ২০১২, ১৮ শ্রাবণ ১৪১৯

যশোরের মনিরামপুরে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাষকৃত উফশী জাতের বারী-৪ গ্রীষ্মকালীন টমেটো বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখানকার আবহাওয়া ও জলবায়ু টমেটো চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী হওয়ায় সবজি চাষে সফলতার নতুন দুয়ার উন্মোচন করেছে। সে কারণেই রমজান মাসকে টার্গেট করে টমেটো চাষ শুরু করে এখানকার চাষিরা।
শীতকালীন সবজি হিসেবে টমেটো উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে চাষাবাদ হয়ে থাকে। আর সালাদ ও রকমারি খাবারের রসনা মেটাতে টমেটোর অভাব গ্রীষ্মকালে তীব্র হয়। তবে সে অভাব দূর করছে মনিরামপুরে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ শুরু হয়েছে গত কয়েক বছর ধরে। কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী উপজেলার কাশিপুর, শ্যামকুড়, চণ্ডিপুর গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ হয়েছে, যা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা গ্রীষ্মকালীন এ ফসলের চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে।
এসব জমিতে উফশী জাতের বারী-৪ গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হচ্ছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বীজ বপন করা হয়। ২০ দিন বয়সের চারাগাছ উঠিয়ে তৈরিকৃত অপেক্ষাকৃত উঁচু সমতল জমিতে লাগানো হয়। চারাগাছ লাগানোর ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে টমেটো গাছে ফল আসা শুরু করে। সফল চাষি আজিজুর রহমানের সঠিক পরিচর্যায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো গাছে ফল আসতে শুরু করেছে। ৫ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেছেন তিনি। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তার মোট খরচ হবে ২০ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে তিনি প্রায় ৪ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। ওই জমি থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।
Wednesday, August 1, 2012
টবে ব্রোকলি বা সবুজ ফুলকপি চাষ

জাত :
আমাদের দেশে এল সেন্ট্রো, ডি সিক্কো, প্রিমিয়াম ক্রস, গ্রীন কমেট ইত্যাদি জাতের ব্রোকলি পাওয়া যায়।
আমাদের দেশে এল সেন্ট্রো, ডি সিক্কো, প্রিমিয়াম ক্রস, গ্রীন কমেট ইত্যাদি জাতের ব্রোকলি পাওয়া যায়।
সময়: আশ্বিন-অগ্রহায়ণ (সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর) চাষের সময়।
বীজ থেকে চারা তৈরি :
বীজ থেকে চারা তৈরি করে মূল টবে লাগাতে হবে। বীজ গজাতে সময় লাগে ৩/৪ দিনে। ৮/৯ দিন বয়সের চারা তুলে অল্প দূরত্বে আরেকটি বীজতলার টবে লাগাতে পারলে শক্তিশালী চারা পাওয়া যাবে।
বীজ থেকে চারা তৈরি করে মূল টবে লাগাতে হবে। বীজ গজাতে সময় লাগে ৩/৪ দিনে। ৮/৯ দিন বয়সের চারা তুলে অল্প দূরত্বে আরেকটি বীজতলার টবে লাগাতে পারলে শক্তিশালী চারা পাওয়া যাবে।
সার ও মাটি :
গোবর, টিএসপি ও খৈল দিয়ে সার-মাটি তৈরি করতে হবে। মনে রাখতে হবে মাটি সব সময় নরম তুলতুলে থাকলে গাছ তাড়াতাড়ি বাড়ে।
গোবর, টিএসপি ও খৈল দিয়ে সার-মাটি তৈরি করতে হবে। মনে রাখতে হবে মাটি সব সময় নরম তুলতুলে থাকলে গাছ তাড়াতাড়ি বাড়ে।
চারা রোপণ :
৩/৪ সপ্তাহের সুস্থ চারা সার-মাটি ভরা টবে লাগতে হবে। চারা লাগাতে হবে
৩/৪ সপ্তাহের সুস্থ চারা সার-মাটি ভরা টবে লাগতে হবে। চারা লাগাতে হবে
বিকাল বেলাতে। চারা লাগানোর পর গোড়ায় মাটি খুব হালকা করে চেপে দিতে হবে। কেননা জোরে চাপ দিলে নরম শিকড় ছিঁড়ে যেতে পারে।
পরিচর্যা :
ব্রোকলির চারা লাগানোর প্রথম ৩/৪ দিন চারাকে ছায়া দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে
এবং চারা না লেগে যাওয়া পর্যন্ত সকাল-বিকাল পানি দিতে হবে। চারা লেগে গেলে মাঝে মাঝে মাটি একটু খুঁচিয়ে দিতে হবে এবং ২/১ দিন পর পর সেচ দিতে হবে। গাছ একটু বড় হলে ১৫ দিন পরপর তরল সার বা পাতার সার দিলে ভাল হয়। পরে গোড়ার মাটি চারদিক থেকে তুলে দিতে হবে এবং টবের কিনার বরাবর সেচ দিতে হবে।
ব্রোকলির চারা লাগানোর প্রথম ৩/৪ দিন চারাকে ছায়া দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে
এবং চারা না লেগে যাওয়া পর্যন্ত সকাল-বিকাল পানি দিতে হবে। চারা লেগে গেলে মাঝে মাঝে মাটি একটু খুঁচিয়ে দিতে হবে এবং ২/১ দিন পর পর সেচ দিতে হবে। গাছ একটু বড় হলে ১৫ দিন পরপর তরল সার বা পাতার সার দিলে ভাল হয়। পরে গোড়ার মাটি চারদিক থেকে তুলে দিতে হবে এবং টবের কিনার বরাবর সেচ দিতে হবে।
ক্ষতিকর পোকা : শুঁয়া পোকা ও জাব পোকা ব্রোকলির ক্ষতি করে।
প্রতিকার :
জাব পোকা বেশি হলে রিডেন ও শুঁয়া পোকা বেশি হলে মার্শাল ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে সহকারি উপ-কৃষি কর্মকতার পরামর্শ অনুযায়ী। যদি শুঁয়া পোকা এবং জাব পোকা একসাথে আক্রমণ করে তাহলে নাইট্রো ওষুধ স্প্রে করা যেতে পারে।
জাব পোকা বেশি হলে রিডেন ও শুঁয়া পোকা বেশি হলে মার্শাল ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে সহকারি উপ-কৃষি কর্মকতার পরামর্শ অনুযায়ী। যদি শুঁয়া পোকা এবং জাব পোকা একসাথে আক্রমণ করে তাহলে নাইট্রো ওষুধ স্প্রে করা যেতে পারে।
ফসল সংগ্রহ :
ব্রোকলির চারা রোপণের পর ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাসের মধ্যে সবজিটি খাবার উপযোগী হয়। ব্রোকলির কাণ্ডের শাঁস খুব নরম হয় বলে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। ফুল ২/৩ সপ্তাহ হলে খাওয়ার উপযোগী হয়। ফসল সংগ্রহের সময় প্রথমে উপরের ফুলটি কেটে নিয়ে গাছটি বাড়তে দিলে নিচের পাতার গোড়া থেকে আবার ফুল বের হবে যা পরবর্তীতে সময়মত সংগ্রহ করা যাবে
ব্রোকলির চারা রোপণের পর ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাসের মধ্যে সবজিটি খাবার উপযোগী হয়। ব্রোকলির কাণ্ডের শাঁস খুব নরম হয় বলে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। ফুল ২/৩ সপ্তাহ হলে খাওয়ার উপযোগী হয়। ফসল সংগ্রহের সময় প্রথমে উপরের ফুলটি কেটে নিয়ে গাছটি বাড়তে দিলে নিচের পাতার গোড়া থেকে আবার ফুল বের হবে যা পরবর্তীতে সময়মত সংগ্রহ করা যাবে
বটতৈল টাকিমারায় মেশিনের সাহায্যে ধান রোপন
বুধবার, ১ আগস্ট, ২০১২

Tuesday, July 31, 2012
পেয়ারার ডাল বাঁকালেই ফলন দশগুণ! ফল ধরবে বারো মাস!
ডাল বাঁকালেই ফলন দশগুণ। তা ছাড়া একই প্রযুক্তিতে বছরের বারো মাসই ফল ধরানো সম্ভব। ফলের মৌসুমে গাছের ফুল ছিঁড়ে দিয়ে এ প্রক্রিয়াকে আরো প্রভাবিত করা যায়, যার ফলে সারা বছরই ফলের মৌসুমের তুলনায়্র আট থেকে দশগুণ বেশি ফল ধরবে গাছে। পেয়ারা গাছের ক্ষেত্রে দীর্ঘ ২৭ মাস গবেষণার পর সম্পূর্ণ নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সম্পর্কে এই তথ্য দিলেন বাউকুল উদ্ভাবক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ রহিম।
উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সম্পর্কে ড. রহিম কালের কণ্ঠকে বলেন, সাধারণত বর্ষা ও শীত_এই দুই ঋতুতে গাছে পেয়ারা হয়। তবে শীত অপেক্ষা বর্ষাকালে ফলন একটু বেশি হয়। বর্ষাকালে জলীয় ভাব বেশি থাকায় ফলের মিষ্টতা ও অন্য গুণাগুণ শীতকালের ফলের থেকে অনেকাংশেই কম থাকে। তা ছাড়া জলীয় ভাব বেশি থাকায় পাকা ফল তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়, ফলে দাম থাকে কম। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সব জাতের পেয়ারার গুণাগুণ শীতকালে বেড়ে যায়, রোগ ও পোকার আক্রমণও কম থাকে। ফলের আকৃতি এবং রং সব দিক থেকেই সুন্দর হওয়ায় এই সময়ে পেয়ারার দামও থাকে বেশি। এসব দিক বিবেচনায় রেখেই বর্ষাকাল বাদে কিভাবে অন্যান্য ঋতুতে অত্যধিক হারে উৎপাদন বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে গবেষণা শুরু হয়। এ লক্ষ্যে ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নিবিড় গবেষণার মাধ্যমে 'গাছের ডাল বাঁকানো' পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে প্রতিটি গাছ থেকে সাধারণের তুলনায় আট থেকে দশগুণ বেশি পেয়ারা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া পেয়ারার মৌসুমে গাছের ফুল ও ফল ছিঁড়ে দিয়ে এ প্রক্রিয়াকে আরো প্রভাবিত করা যায় বলে জানান তিনি।
এ প্রযুক্তির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জার্মপ্লাজম সেন্টারের প্রধান গবেষণা সহযোগী কৃষিবিদ শামসুল আলম মিঠু কালের কণ্ঠকে বলেন, বছরে দুবার অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে (এপ্রিল-জুন) এবং হেমন্তকালে (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর) শাখা-প্রশাখার নিয়ন্ত্রিত বিন্যাসের মাধ্যমে সারা বছর পেয়ারার ফুল ও ফল ধারণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। গাছের বয়স দেড় থেকে দুই বছর হলেই এই পদ্ধতি শুরু করা যাবে এবং পাঁচ থেকে ছয় বছর পর্যন্ত এই পদ্ধতিতে ফলন বাড়ানো সম্ভব। ডাল বাঁকানোর ১০-১৫ দিন আগে গাছের গোড়ায় সার ও পানি দেওয়া হয়। ডাল বাঁকানোর সময় প্রতিটি শাখার অগ্রভাগের এক থেকে দেড় ফুট অঞ্চলের পাতা ও ফুল-ফল রেখে বাকি অংশ ছেঁটে দেওয়া হয়। এরপর ডালগুলোকে সুতা দিয়ে বেঁধে তা বাঁকিয়ে মাটির কাছাকাছি কাণ্ডের সঙ্গে অথবা খুঁটির মাধ্যমে মাটিতে বেঁধে দেওয়া হয়। গ্রীষ্মকালে মাত্র ১০ থেকে ১২ দিন পরই নতুন ডাল গজানো শুরু হয়। নতুন ডাল এক সেন্টিমিটার লম্বা হলে বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। আর হেমন্তকালে নতুন ডাল গজাতে ২০ থেকে ২৫ দিন লাগে।
শামসুল আলম আরো বলেন, ডাল বাঁকানোর ৪৫ থেকে ৬০ দিন পরে ফুল ধরা শুরু হয়। এভাবে গজানো প্রায় প্রতি পাতার কোলেই ফুল আসে। তবে এ সময় টানা বৃষ্টি বা আর্দ্র আবহাওয়া ফলন বৃদ্ধিতে ক্ষতিকারক। এ পদ্ধতিতে সারা বছরই অত্যধিক হারে ফলন পাওয়া যায়। তা ছাড়া ফলের মিষ্টতা বেশি এবং রং ও আকৃতি সুন্দর হওয়ায় পেয়ারার বাজারদরও বেশি পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে ড. রহিম বলেন, এখন পর্যন্ত শুধু পেয়ারা গাছের ক্ষেত্রেই এ গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। তবে অন্য ফলের ক্ষেত্রেও গবেষণা চলছে। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গ্রীষ্মকালে গাছপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ কেজি এবং হেমন্তকালে গাছপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ কেজি পেয়ারার ফলন পাওয়া গেছে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় আট থেকে দশগুণ বেশি। তিনি বলেন, কৃষকরা সহজেই এই পদ্ধতিতে পেয়ারা চাষ করে উৎপাদন বাড়াতে পারবেন, যা বাউকুলের মতো পেয়ারাকেও মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তুলবে।
Subscribe to:
Posts (Atom)