Monday, July 9, 2012

মুগডাল চাষের দিকে ঝুঁকছেন চৌগাছার কৃষকরা,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,




ধান ও পাটের ন্যায্য দাম পাননি চাষীরা। বিকল্প হিসেবে তারা মুগডাল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। সনাতন পদ্ধতি বাদ দিয়ে এবার বৈজ্ঞানিক উপায়ে মুগডাল চাষ করেছেন চাষীরা। এতে কম খরচে ভালো ফলন হয়েছে। পাশাপাশি মুগডাল চাষে ৫০০ নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ৬০০ হেক্টর জমিতে বারী-৫ ও বারী-৬ জাতের মুগডাল চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। ক্ষেত পরিচর্যা ও মুগডাল উত্তোলনের কাজ করছেন প্রায় ৫০০ নারী। সংশ্লিষ্টরা জানান, চৌগাছায় মুগডাল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। উপজেলার কৃষকরা এবার ধান-পাটের দাম না পেয়ে ইরি ও মুগডাল চাষে ঝুঁকে পড়েছে। মুুুুগডালের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা খুশি। চলতি বছর সারিবদ্ধ পদ্ধতিতে মুগের ফলন বেশি ভালো হয়েছে। মুগডাল চাষে উত্পাদন ব্যয় কম সে কারণে লাভ বেশি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্ষয়ক্ষতি কম হওয়া এবং গত মৌসুমে উত্পাদিত মুগডালের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা এ মৌসুমে ব্যাপক হারে মুগডালের চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় মুগডাল চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩০ হেক্টর জমিতে। সেখানে ৬০০ হেক্টর জমিতে বারী-৫ ও বারী-৬ জাতের মুগডাল চাষ হয়েছে। সম্প্রতি যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শেখ হেমায়েত হোসেন উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের বেলায়েত হোসেনের সারিবদ্ধ মুগডালের খামার পরিদর্শন করেন এবং মুগবীজ সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, এখানে উত্পাদিত মুগডাল এলাকার চাহিদা মিটিয়েও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হয়ে থাকে। চৌগাছার ন্যায় সারা দেশের ডাল চাষোপযোগী জেলা-উপজেলাগুলোতে মুগসহ অন্যান্য ডালের চাষ বাড়াতে পারলে বিদেশ থেকে আর ডাল আমদানি করতে হবে না। এ বছর ৭ মেট্রিক টন ডাল উত্পাদনের মাধ্যমে এখানকার কৃষকরা কয়েক লাখ টাকা উপার্জন করবে। এছাড়া ক্ষেত পরিচর্যা ও মুগডাল উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত প্রায় ৫শ’ কর্মজীবী নারী শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। পিছিয়ে পড়া এসব নারী মৌসুমের ৩০ দিনে জনপ্রতি প্রায় ৫ হাজার টাকা উপার্জনে সক্ষম হবে।
উপজেলার বকশিপুর গ্রামের মুগচাষী আলাউদ্দীন, দুলালপুর গ্রামের আবুল বাশার, দুর্গাপুর গ্রামের আলামিন, সুলতান ও যাত্রাপুর গ্রামের ইউনুচ আলী জানান, এ বছর তারা মুগডাল চাষ করে লাভবান হয়েছেন। তারা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে সারিবদ্ধভাবে মুগ চাষ করলে শ্রমিক কম লাগে। কৃষি অফিসের পরামর্শে এ পদ্ধতিতে মুগ চাষ করে এবার ভালো ফলন পেয়েছি। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিঘাপ্রতি ৬-৭ মণ হারে ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজারে এ ডাল ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নিজেদের উত্পাদিত বীজে আবার চাষ করা যায় বলে বীজের কোনো সঙ্কট হয় না। উত্পাদন খরচ কম কিন্তু বিক্রয়মূল্য বেশি হওয়ায় এবং মাত্র ২ মাসে খরিপ-১ মৌসুমে এ শস্য ঘরে তোলা যায়। এ কারণে দিন দিন এ ডাল আবাদে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছে। চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, বেলে দো-আঁশ মাটিতে মুগডালের উত্পাদন ব্যয় খুবই কম এবং ফলনও ভালো হয়।

No comments:

Post a Comment