Sunday, July 22, 2012


কলা ক্ষেতের বালাই দমন ব্যবস্থাপনা

কৃষি প্রতিবেদক \ এক সময় কেবলমাত্র পারিবারিক চাহিদা পূরণের জন্য বসতবাড়ি সংলগ্ন আঙ্গিনায় কলা চাষ হতো। সময়ের তাগিদে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। চাহিদা বিবেচনায় কলা এখন একটি অন্যতম বানিজ্যিক ফসল। তবে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের রোগ ও পোকার আক্রমনে কলাক্ষেত আংশিক বা সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়। কলা ক্ষেতে সাধারণত কন্দের পোকা, জাব পোকা, মাকড় ও নিমাটোড জাতীয় পোকা এবং পানামা উইল্ট, পাতার দাগ, এ্যানথ্রাকনোজ, বাঞ্চিটপ, ব্যাকটেরিয়াল উইল্ট এবং মোজাইক জাতীয় রোগদ্বারা আক্রামত্ম হয়। জৈব ও অজৈব উপায়ে কলা ক্ষেতের এসব রোগ ও পোকা দমন করা যায়। কন্দের পোকা/খোলের পোকা-এ পোকার রং লালচে বাদামী আবার চকচকে কালো রঙের হয়। ১ থেকে ১.৩ সেন্টিমিটার পর্যমত্ম লম্বা হয়। পিঠ শক্ত ও শরু শুড় যুক্ত। পূর্ণ বয়স্ক মা পোকা কলা গাছের গোড়ায় ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়েই কন্দ ফুটো করে ভিতরে প্রবেশ করে। এ পোকা অনেক সময় কন্দ খেতে খেতে তেউড়/থোড় পর্যমত্ম পৌছে যায়। সামান্য আক্রামেত্ম গাছের বৃদ্ধি থেমে যায়, অতি আক্রামেত্ম ফলন কমে যায় এবং আক্রামেত্মর মাত্রা ক্ষতির সীমা অতিক্রম করলে গাছ যে কোন স্থান থেকে খসে পড়ে বা হেলে মাটিতে পড়ে যায়। এ জাতীয় পোকার আক্রমন প্রতিরোধ করতে হলে সুস্থ সবল গাছের থেকে চারা সংগ্রহ করতে হবে। চারা রোপন কালে প্রতি মাদায় ৫০ গ্রাম কারবারিল/৩০ গ্রাম ফুরাডান-৩জি/ অথবা ৫০ গ্রাম নিমপাতা/৫০ গ্রাম আতাপাতা/৩০ গ্রাম নিমবীজ/৩০ গ্রাম আতাবীজ এক লিটার পানিতে দ্রবিভূত করে প্রয়োগ করতে হবে।  লাল মাকড়-লাল মাকড় কলা গাছের কচিপাতা খেয়ে ফেলে এর ফলে গাছের বৃদ্ধি থেমে যায় পর্যায়ক্রমে ফলনও কমে যায়। এ পোকার আক্রমন হলে কেরাথেন গ্রুপের যে কোন ওষুধ প্রতি লিাটার পানিতে ১.৫ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এছাড়া আতাপাতা, নিমপাতা এবং নিমখোল প্রতি লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম হারে অথবা আতাবীজ, নিমবীজ, বা তামাক পাতা প্রতি লিটার পানিতে ৩০-৫০ গ্রাম হারে দ্রবিভূত করে ক্ষেতে স্প্রে করতে হবে। নিমাটোড-এ জাতীয় পোকা কলা গাছের শেকড়ে আক্রমন করে। এর আক্রমনে শেকড় বেটে হয়েযায়। কলাগাছ উপড়ে পড়ে। এ জাতীয় পোকার আক্রমন প্রতিরোধ করতে গাছ লাগানোর আগে ৪০ গ্রাম হারে কার্বোফুরান জাতীয় ওষুধ গর্তের মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। এছাড়া উপরে উল্লিখিত মাত্রায় জৈব বালাইনাশক স্প্রে করে ফল পাওয়া যাবে। জাব পোকা-এ পোকা কলা গাছের কচিপাতা খেয়ে ফেলে। এর আক্রমনে গাছের বৃদ্ধি হ্রাস পায় এবং ফলন কমে যায়। ইমিডাক্লোপ্রিড বা কার্বোসালফেন প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে স্প্রে করা যেতে পারে। এছাড়া উপরে উল্লিখিত মাত্রায় জৈব বালাইনাশক স্প্রে করেও কাঙ্খিত ফল পাওয়া যাবে। (আগামী দিন থাকছে কলা গাছের বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটিরিয়া জনিত রোগ দমন ব্যবস্থাপনা)

No comments:

Post a Comment