Wednesday, July 18, 2012


কুষ্টিয়া সদর উপজেলার অগ্রগামী কৃষি ব্লক বড়িয়া-টাকিমারা মুজিব নগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এগিয়ে নিয়েছে আরো এক ধাপ

এস কে বাশার \ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের বটতৈল টাকিমারা, বড়িয়া টাকিমারা, বড়িয়া, ভাদালিয়াপাড়া এবং বটতৈল ভাদালিয়াপাড়া নিয়ে বড়িয়া-টাকিমারা ব্লক। এ ব্লকের মোট আয়তন ৮১০ হেক্টর। আবাদি জমির পরিমান ৫৯০ হেক্টর। রাসত্মাঘাট, আবাস স্থল, জলাশয় এবং স্থাপনা মিলে জমির পরিমান ২২০ হেক্টর। তবে ৫৯০ হেক্টর জমির মধ্যে ৪০ শতাংশ জমিতেই বছরে ৪টি ফসল উৎপাদন হয়। ৬০ শতাংশ জমি তিন ফসলী জানালেন ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোল্লা হাফিজুর রহমান। অনাবাদি জমি শুন্য শতাংশ। এ ব্লকের ৯০ শতাংশ কৃষকই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। প্রতিটি কৃষকই কোন না কোন প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে গড়ে তুলেছেন আধুনিক কৃষির উপযোগী হিসেবে। টাকিমারার সাইদুল ইসলাম, মোফাজ্জেল হোসেন, আব্দুর রহমান জানান, তারা মুজিব নগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। ওই প্রকল্পের আওতায় আউশ ধানের প্রদর্শনী প্লটও পেয়েছেন তারা। বটতৈল ভাদালিয়াপাড়ার কৃষক হাবিল শেখ একই প্রকল্পের আওতায় একক ফসলের মাঠ প্রদর্শনী হিসেবে পেপের প্রদর্শনী পেয়েছেন। তিনি বলেন, প্রকল্প থেকে তাকে প্রশিক্ষণ না দেয়া হলেও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়মিত তদারকি এবং পরামর্শ প্রশিক্ষনের সমান কাজ করছে। তিনি ১০ কাঠা জমিতে পেপে রোপন করেছেন বলে জানান। টাকিমারার আবুল কাশেম বলেন, তিনি গত বছরে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর প্রদর্শনী প্লট করেছিলেন। কিন্তু গত বছর আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় টমেটো চাষে তাকে লোকসান গুনতে হয়েছে। এবছরও একই প্রকল্পের আওতায় টমেটোর প্রদর্শনী প্লট করেছেন। কাশেম বলেন, তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। আর প্রশিক্ষণ লব্ধ জ্ঞান এখন তাকে আধুনিক চাষাবাদের ক্ষেত্রে সহায়তা করছে। এবছর তিনি টমেটো চাষে সফল হবেন বলে আশা করছেন। এদিকে মুজিব নগর প্রকল্পের আওতায় বটতৈল টাকিমারাকে সজনে গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী সজনে গ্রামের ৪০টি বাড়িতে সজনে রোপন করতে হবে। গতকাল বুধবার বটতৈল টাকিমারা এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা যায়, ওই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই ৫-১০টি সজনে ডাল রোপণ করা হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোল্লা হাফিজ এসে তাদের বললেন গ্রামের প্রত্যেককেই সজনে রোপণ করতে হবে। এজন্য তিনি বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের জন্য সজনে ডাল সরবরাহ করেছেন। অনেকে সময়ের অভাবে সজনে ডাল রোপণ করতে পারছিলেন না তাদের লেবার দিয়েও সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়া বাজারে সজনের বেশ চাহিদাও রয়েছে। এদিক বিবেচনা করলে সজনে বেশ লাভজনক ফসল। প্রত্যেক কৃষকের বাড়ির আশেপাশে কিছুটা হলেও পতিত জমি পড়ে থাকে। বাড়ির আঙ্গিনা, রাসত্মার ঢালসহ পতিত জমিকে তারা সজনে ক্ষেত হিসেবে ব্যবহার করছে। আগামী বছরেই তারা এর সুফল পাবেন বলে আশা করছেন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোল্লা হাফিজ বলেন, প্রকল্প অনুযায় ৪০টি বাড়িতে ১০টি করে সজনে গাছ রোপণ করার কথা। কৃষকদের এর সুফল সম্পর্কে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়ে গ্রামের সকলেই সজনে গাছ রোপনে আগ্রহী হয়। এজন্য ওই গ্রামের সকলেকেই সজনে ডাল সরবরাহ করতে হয়েছে। গ্রামের চারশতাধিক কৃষককে সজনে ডাল সরবরাহ করতে যেয়ে তাকে অনেক ব্যয়ও করতে হয়েছে। তবে সজনে ডাল রোপনের জন্য তাকে দপ্তর থেকে ৬০০০ টাকা দেয়া হবে, এছাড়া কিছু সারও দেয়া হবে বলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এখন বৃষ্টির সময়, বৃষ্টি একটু কম হলেই কৃষকদের মাঝে সার সরবরাহ করা হবে। তবে সুত্রের দাবি প্রতিটি ডাল রোপণের আগে নির্বাচিত কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেবার কথা। গর্ত তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ, ডাল কেনার জন্য অর্থ বরাদ্দ, সার এবং পরিচর্যার জন্যও অর্থ বরাদ্দ রয়েছে। সুত্রমতে প্রশিক্ষণসহ আনুসঙ্গিক খরচবাবদ একটি ডালের পিছনে এক হাজার টাকা ব্যয় হবার কথা। ৪০ জন কৃষকের জন্য ব্যয় হবার কথা ৪০ হাজার টাকা। তাহলে বাকি অর্থ কোথায়?

No comments:

Post a Comment