Wednesday, July 18, 2012


দাম কম থাকায় নেছারাবাদের পেয়ারা চাষিরা হতাশ

আতিকুল ইসলাম লিটু নেছারাবাদ (পিরোজপুর)
পিরোজপুরের নেছারাবাদে পেয়ারার উৎপাদন ব্যয় বেশি হলেও সে অনুযায়ী দাম পাচ্ছেন না এখানকার চাষিরা। এ ছাড়া সংরণের অভাব ও অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থার কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পেয়ারাচাষিরা। সংরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগ থাকলে মওসুমি এ ফল বছরজুড়ে ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে পারতো এবং চাষিরাও আর্থিকভাবে লাভবান হতেন। 
নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চাষিরা যুগ যুগ ধরে পেয়ারার আবাদ করে আসছেন। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও হিমাগারসহ প্রক্রিয়াজাতের ব্যবস্থা না হওয়ায় এবং দিন দিন উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিরা পেয়ারা আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন। উপজেলার আটঘর, কুড়িয়ানা, আদমকাঠি, ধলহার, কঠুরাকাঠি, আন্দাকুল, জিন্দাকাঠি, ব্রাহ্মণকাঠি, আতা, জামুয়া, মাদ্রা ঝালকাঠি, শশীদ, পূর্ব জলাবাড়ি, আদাবাড়ি ও জৌসারসহ বিভিন্ন গ্রামের ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পেয়ারার চাষাবাদ হচ্ছে। দুই হাজার ২৫টি পেয়ারা বাগান রয়েছে ও এক হাজার ২৫০ জন চাষি এ আবাদে জড়িত। 
জিন্দাকাঠি গ্রামের চাষি গোকুল চন্দ্র মজুমদার জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পেয়ারার ফলন ভালো হয়েছে। তবে দাম পাওয়া যাচ্ছে না। বাগান পরিচর্যাসহ শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় চাষিরা আর্থিকভাবে তেমন লাভবান হতে পারছেন না। আন্দাকুল গ্রামের পেয়ারাচাষি নারায়ণ চন্দ্র মণ্ডল জানান, কৃষি বিভাগ ধানচাষিদের মধ্যে বিনামূল্যে সার বিতরণ করলেও পেয়ারা চাষিদের কিছুই দিচ্ছেন না। সহজ শর্তে শুধু পেয়ারা চাষাবাদের জন্য কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি। পেয়ারা ও আমড়াচাষি সমিতির সহসভাপতি দীনেশ মণ্ডল জানান, অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থার কারণে দ্রুত পচনশীল এ ফল দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান দিতে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। সরেজমিন আটঘর ও কুড়িয়ানা পেয়ারাহাটে বিভিন্ন গ্রামের পেয়ারাচাষিরা নয়া দিগন্তকে জানান, এ বছর পেয়ারার ফলন ভালো হয়েছে। তবে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে না। উপজেলায় এলাকার হাটগুলোতে পেয়ারা পাইকারিভাবে মণপ্রতি ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বিধান রায় জানান, সংরণসহ কৃষিভিত্তিক শিল্পকারখানা গড়ে উঠলে এখানকার পেয়ারাচাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।

No comments:

Post a Comment