Sunday, July 8, 2012

উত্তরাঞ্চলে পাটের বাম্পার ফলন



 দেশের উত্তরাঞ্চলে চলতি বছর পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবারলক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ বেশি পাট উৎপাদিত হয়েছে।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা কেন্দ্রের রংপুর অঞ্চলের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মনিকা রানী দেবনাথ জানান, ‘পাট চাষে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর পাটের উৎপাদন আশাব্যাঞ্জক হয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) সূত্র জানায়, এ বছর দুই লাখ চার হাজার তিন হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে দুই লাখ ২৫ হাজার ৪৭৬ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। কৃষকরা অতিরিক্ত ২১ হাজার ৪০৩ হেক্টর জমিতে এবার পাট চাষ করেছেন, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। ফসলের উৎপাদনও ভালো হয়েছে।
সূত্র জানায়, এবছর উত্তরবঙ্গে তোশা পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৭৭ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমিতে। তবে চাষ হয়েছে দুই লাখ দুই হাজার ৮৩১ হেক্টর জমিতে। স্থানীয় জাতের পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার ২৯৮ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ হয়েছে ৭২ হাজার ৮২২ হেক্টর জমিতে। এছাড়া মেছতা জাতের পাট ৮৮০ হেক্টর জমির পরিবর্তে ৪ হাজার ৮২৩ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
রংপুরে শস্য ব্যবস্থা উদ্যোগের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কর্মকর্তা ও কৃষি বিজ্ঞানী ড. এম এ মজিদ বলেন, “সম্প্রতি পাট চাষে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। পাট রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি পাটকলগুলো পুনরায় চালুর উদ্যোগ, কৃষকদের ভর্তুকিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা প্রদানই এর অন্যতম কারণ।”
তিনি বলেন, এ অঞ্চলের কৃষকেরা এবার পাট চাষে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ‘সিডার মেশিনের মাধ্যমে ক্ষেতে বীজ বপণ করায় প্রচুর পরিমাণ বীজের অপচয় রোধ করা গেছে এবং উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পেয়েছে।
কৃষকরা এখন পাট চাষে অতীতের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রহী উল্লেখ করে কৃষি বিশেষজ্ঞ মো. খন্দকার মেজবাউল ইসলাম বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে পরিবেশবান্ধব তন্তু হিসেবে পাটের চাহিদা আবারো বেড়ে যাওয়ায় চাষীরা পুনরায় পাট চাষের প্রতি ঝুঁকতে শুরু করেছে।”
ডিএই’র অতিরিক্ত পরিচালক সেকান্দার আলী জানান, পাটজাত পণ্যের কারখানার সংখ্যা এবং রফতানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কৃষকরা এখন অধিক জমিতে অন্য ফসলের পরিবর্তে পাটচাষে উৎসাহিত হচ্ছে।
একাধিক চাষী পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করতে সরকারি বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। কৃষকরা শুষ্ক এলাকায় পাট পঁচিয়ে এর ছাল ছাড়াতে রিবন রেটিং পদ্ধতির উদ্ভাবন এবং সরবরাহের কারণে অধিক উপকৃত হয়েছেন বলে জানান চাষীরা। -বাসস

No comments:

Post a Comment